মুভমেন্ট পাসের আবেদন করুন এখানে। বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো মুভমেন্ট পাস। কোভিড-১৯ মহামারীতে লকডাউনের মধ্যে মানুষের ‘অনিয়ন্ত্রিত ও অপ্রয়োজনীয়’ চলাচল কমাতে এবং জরুরি বিশেষ প্রয়োজনে যাতায়াতের সুবিধায় বাংলাদেশ পুলিশ চালু করছে মুভমেন্ট পাস। এর ফলে ঘর থেকে বের হতে ও ফিরতে লাগবে মুভমেন্ট পাস। ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউন চালু করা হয়েছে যা চলমান থাকবে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত। এই কয়েকদিন বাংলাদেশের সকল নাগরিকদের ঘরের বাইরে না যাওয়ার আহবান জানানো হয়েছে। এর ফলে করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার মুভমেন্ট পাসের ওয়েবসাইট চালুর প্রথম ঘণ্টায় আবেদন জমা পড়েছে প্রায় সোয়া লাখের মতো। আর প্রতি মিনিটে প্রায় ১৫ হাজার আবেদন জমা হচ্ছে। দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স অডিটেরিয়ামে মুভমেন্ট পাস ওয়েবসাইটটির উদ্বোধন করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, যে কেউ এ ওয়েবসাইটে ঢুকে কয়েকটি তথ্য দিয়ে সহজেই এ পাস সংগ্রহ করতে পারবেন।
ঈদ যাত্রায় যেভাবে মিলবে মোটরসাইকেলের মুভমেন্ট পাস
মুভমেন্ট পাস সম্পর্কে অনেকেই জানে না। কারণ এর আগে এমন কোন পদ্ধতি চালু ছিল না। তাই অনেকের মনে মুভমেন্ট পাস নিয়ে নানা প্রশ্ন জেগেছে। যেমন মুভমেন্ট পাস কী? কীভাবে আবেদন করতে হবে? মুভমেন্ট পাসের প্রয়োজনীয়তা, মুভমেন্ট পাসে কি কি সুবিধা পাবেন? মুভমেন্ট পাসের আবেদন না করলে আপনি কি কি সমস্যা পড়বে পারেন ইত্যাদি প্রশ্ন। তবে চিন্তার কোন কারণ নেই আপনাদের সকল প্রশ্নের সঠিক উত্তর নিয়ে আমি হাজির হয়েছি।
ঈদে ঘরে ফেরায় বাইকারদের জন্য মুভমেন্ট পাস
সাধারণত মুভমেন্ট পাস হলো জরুরি সেবা গ্রহনের জন্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশ কর্তৃক অনুমতি পত্র গ্রহণের প্রক্রিয়া। যেহেতু করোনার প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এখন পর্যন্ত কোন সুনির্দিষ্ট টিকা আবিষ্কার না হওয়ার ফলে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোভিড-১৯ মহামারি কিছু রোধ কল্পে সল্প সময়ের জন্য লকউাউন দেওয়ার। এতে করে প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের না হলে ভাইরাস ছড়ানো কিছু বন্ধ থাকবে। আশা করি দেশের একজন সুনাগরিক হিসেবে আপনার এটি মেনে চলা উচিত। এবং অতি জরুরি ছাড়া ঘরের বাইরে না বের হওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। আর বের হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় কারণ সহ মুভমেন্ট পাসের আবেদন করা উচিত।
আরো পড়ুন: Apply For Movement Pass
যেভাবে পাওয়া যাবে মোটরসাইকেলের মুভমেন্ট পাস
যেহেতু সরকারের জনপ্রশাসন অধিদপ্তর থেকে লকডাউন ঘোষনা করা হয়েছে তাই এটি পালন করা বাধ্যতামূলক। তারপরও অনেক মানুষের প্রয়োজনীয় কাজের ক্ষেত্রে ঘরের বাইরে বের হওয়াটাও জরুরি। তাই সরকার একটি অভিনব পদ্ধতি চালু করেছে তা হলো মুভমেন্ট পাস। এর মাধ্যমে অনলাইনে মুভমেন্ট পাস নিয়ে আগামী কয়েকদিন বাড়ির বাইরে সীমিত সময়ের জন্য বের হতে পারবেন। তাই বলা যায় বাড়ির বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে মুভমেন্ট পাসের আবেদনের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। মুভমেন্ট পাস না নিয়ে রাস্তায় বের হলে কি হতে পারে? পাস না নিয়ে রাস্তায় বের হলে যেকোনো সময় পুলিশের কাছে জবাবদিহিতা করতে হতে পারে। প্রশাসন যে কোনো যেকোনো ধরনের শাস্তি প্রদান করতে পারে। জরিমানা করা হতে পারে। অপমানিত করা হতে পারে। যাত্রা অবস্থায় আপনাকে পুনরায় ফেরত পাঠানো হতে পারে ।
মুভমেন্ট পাসের প্রয়োজনীয় তথ্য
আবেদনকারী কোন থানা এলাকা থেকে কোন থানা এলাকায় যাবেন তা উল্লেখ করতে হবে।
- আবেদনকারীর নাম
- লিঙ্গ
- বয়স
- ভ্রমণের কারণ
- পাস ব্যবহারের তারিখ ও সময়
- পাসের মেয়াদ শেষের তারিখ ও সময়
- পরিচয়পত্র, ছবি।
- পরিচয়পত্র হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্র
- ড্রাইভিং লাইসেন্স
- পাসপোর্ট
- জন্মনিবন্ধন বা স্টুডেন্ট আইডি কার্ড ব্যবহার করা যাবে।
মুভমেন্ট পাসের আবেদন করুন
মুভমেন্ট পাসের আবেদন পদ্ধতি হলো অনলাইন। অনলাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে আবেদনটি করতে হবে। এক্ষেত্রে সুর্নিদিষ্ট কারণ ব্যতিত আপনার আবেদনটি গ্রহণযোগ্য হবে না। এবং আবেদন ছাড়া আপনি যদি বাড়ির বাইরে বের হন তাহলে আপনাকে পুলিশের মুখে জবাবদিহি করতে হতে পারে। এক্ষেত্রে জরিমানাও করতে পারে ভ্রাম্যমান পুলিশ কর্মকর্তা। তাই সাবধান থাকবেন। যাই হোক চলুন এখন আমরা মুভমেন্ট পাসের আবেদনের নিয়মাবলী নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি।
- প্রথমত আপনার মোবাইল/কম্পিউটারের ডাটা চালু করুন।
- তারপর পুলিশের তৈরিকৃত মুভমেন্ট অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান। এটি হলো movementpass.police.gov.bd
- শুরুতে একটি সক্রিয় মোবাইল ফোন নম্বর দিতে হবে।
- আবেদনকারী কোথা থেকে কোথায় যাবেন, তা জানতে চাওয়া হবে।
- সেইসব তথ্য ধাপে ধাপে দিতে হবে।
- এরপর আবেদনকারীর একটি ছবি আপলোড করে ফর্মটি জমা দিতে হবে।
- জমা দেওয়া ফর্মে আবেদনকারী দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মুভমেন্ট পাস ইস্যু করা হবে।
- ওয়েবসাইট থেকেই পাসটি ডাউনলোড করা যাবে।
- লকডাউনে চলাচলের সময় কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের পাস দেখাতে হবে।
যে সকল কাজের ক্ষেত্রে মুভমেন্ট পাস কার্যকরী হবে
মুদি মালামাল কেনাকাটা, কাঁচাবাজার, ওষুধ কেনা, চিকিৎসা, চাকরি, কৃষিকাজ, পণ্য পরিবহন, পণ্য সরবরাহ, ত্রাণ বিতরণ, পাইকারি/খুচরা ক্রয়, পর্যটন, মৃতদেহ সৎকার, ব্যবসাসহ অন্যান্য জরুরি কারণে বাইরে যাওয়ার জন্য পাসের আবেদন করা যাবে। ঢাকার বাইরে যাতায়াতে মুভমেন্ট পাস লাগবে। এছাড়া একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে একাধিক পাস নেওয়া যাবে না। প্রতিবার যাতায়াতের জন্য পাস নিতে হবে, একটি পাস একবার ব্যবহার করা যাবে। যাওয়া এবং আসার জন্য দুটি আলাদা পাসের আবেদন করতে হবে। তবে সাংবাদিকরা মুভমেন্ট পাস প্রদর্শনের আওতামুক্ত থাকবেন বলে জানিয়েছেন বেনজীর আহমেদ।
শেষ কথা
আশা করি মিথ্যা অজুহাত দিয়ে এই সংকটকালীন সময়ে কেউ অযথা পাসের আবেদন করবেন না। মুভমেন্ট পাস নিতে আমরা কাউকে বাধ্য করছি না । এটাকে সাপোর্ট হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে বের হবেন, ঘরের বাইরে গেলে মাস্ক পরতে হবে এবং বাইরে থেকে ঘরে ফিরে স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার হবেন। আপনার মাধ্যমে যেন আপনার প্রিয়জন করোনায় সংক্রমিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।