পদ্মা সেতু অনুচ্ছেদ

বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু হচ্ছে পদ্মা বহুমুখী সেতু। পদ্মা নদীর ওপর তৈরি করা হয়েছে যার সড়ক পথ ও রেলপথ দুই ধরনের পথেরই সুব্যবস্থা রয়েছে। এর উপরের স্তরে রয়েছে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি রেলপথ। এটা দেশের সর্ববৃহৎ প্রকল্প। যা সরকার কোন প্রকার বৈদেশিক সাহায্য ছাড়াই বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নের মাধ্যমে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন। পদ্মা সেতু নির্মাণে দুনীর্তির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিশ্ব ব্যাংক ও সহায়তাকারী দেশগুলো পিছু সরে গেলেও বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব প্রচেষ্টায় সেতুর কাজ সম্পন্ন করেছেন। যা সকল মানুষের কাছে ও দেশের কাছে একটি দৃষ্টান্ত।

পদ্মা সেতু অনুচ্ছেদ

পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করা হয় ২৬ নভেম্বর ২০১৪ এবং শেষ হয় ২৩ জুন ২০২২। পদ্মা বহুমুখী সেতুর নকশা তৈরি করেন এইসিওএমের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পরামর্শকের একটি দল। এমনকি চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড এর আওতাধীন চায়না মেজর ব্রীজ নামক একটি কোম্পানির সাথে চুক্তি বদ্ধ করা হয়। AECOM এর নকশা অনুকরণ করে পদ্মা সেতুর নকশা তৈরি করা হয়েছে। পদ্মা – ব্রক্ষ্মপুত্র – মেঘনা নদীর অববাহিকায় ৪২ টি পিলার ও ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যানের মাধ্যমে পদ্মা সেতু তৈরি করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬.১৫০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ১৮.১০ মিটার। এই বিশাল দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের সেতু নির্মাণে মোট খরচ হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। তার মধ্যে বাংলাদেশের অর্থ বিভাগের সঙ্গে সেতু বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী সরকার সেতু নির্মাণের জন্য ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দেয়। যা সেতু কর্তৃপক্ষ কে ৩৫ বছরের মধ্যে ১শতাংশ হার সুদে পরিশোধ করতে হবে। এসব খরচের মধ্যে সেতুর অবকাঠামো তৈরি, নদী শাসন, সংযোগ সড়ক, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ, বেতন ভাতা ইত্যাদি রয়েছে।

সেতুটি ২৫ জুন ২০২২ সালে উদ্বোধন করা হয়। এটি শুরু হয় মুন্সিগঞ্জ জেলার মাওয়া থেকে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা পর্যন্ত। মাওয়া ও জাজিরা পয়েন্ট দিয়ে নির্দিষ্ট পথের মাধ্যমে বাংলাদেশের কেন্দ্রের সাথে দক্ষিণ – পশ্চিম অংশের সাথে সরাসরি সংযোগ তৈরি করা হয়েছে। আশা করা যায় এই সেতুটি দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিল্প বিকাশের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখবে। পদ্মা বহুমুখী সেতু বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের স্বপ্নের সেতু হিসেবে বাস্তবায়িত হয়েছে।