Durga Puja

দুর্গা পূজা, শারদীয় উৎসব, শ্রী শ্রী শারদীয়া দুর্গাপূজা, শুভ দূর্গা উৎসব, শুভ শারদীয়া, দুর্গতিনাশিনী দুর্গা মা আসিতেছে। দুর্গা পূজার সময়সূচি । জানুন দুর্গা পূজার আর কত দিন বাকি। সালের পূজার সময় সূচি বাংলাদেশ। মহালয়া কবে পড়েছে? ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত পূজার সকল কার্যক্রম। সকল প্রশ্নের উত্তর পাবেন এই আর্টিকেলের মধ্যে তাই দেরি না করে শুরু করা যাক।

‘যা দেবী সর্বভূতেষু শক্তি রূপেন সংস্থিতা।

নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমঃ নমঃ

জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে জানাই শারদীয় শুভেচ্ছা। সনাতন তথা হিন্দু ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। শরতে এ পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ঢাকের মন্ত্রমুগ্ধ আওয়াজ আরো একবার আমাদের জানিয়ে দেয় মা আসছে। কাশ ফুলের গন্ধে মেতেছে সারা আকাশ। কাশফুলের দোলা জানান দিচ্ছে মা আসছে।

আশা করি মা দুর্গা আপনার এবং আপনার পরিবারের সকলের মঙ্গল করুক এবং আপনার পরিবার সুখ সমৃদ্ধি এবং শান্তিতে ভরে উঠুক। মায়ের কাছে প্রার্থনা করব তিনি যেন আপনাকে আমাকে সকলকে সমস্ত বাধা পেরিয়ে জীবনে এগিয়ে চলার শক্তি দেন। সুখ আনন্দ এবং হৃদয় পূর্ণ ভালোবাসা দিয়ে শারদীয় উৎসব উদযাপন করুন। মা দুর্গার আশীর্বাদে পরিবার এবং বন্ধুদের মধ্যে পূজার দিন গুলো মজায় উপভোগ করুন।

দূর্গা পূজা

২০২০ সাল থেকে আমরা করোনা মহামারী মুখোমুখি হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা অনেকেই এই মহামারীর কবলে নিজেদের আপনজনদের হারিয়েছি। তবুও সকল দুঃখ কষ্টের মাঝেও দুর্গাপূজার যেন এক ঝলক সুখের আলো। মা দুর্গার আগমনী যেন আমাদের সকল দুঃখ-কষ্ট দূরে চলে যায়। তিনি যেমন করে ওষুধের বিনাশ করে অসুর নাশিনী হয়েছিলেন ঠিক তেমনি করেই যেন এই মহামারী নামক অসুরকে বধ করে এই পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন। দুর্গাপূজা হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব এই উৎসবের সকল সনাতন বা হিন্দু ধর্মালম্বীরা এক হয়ে মা দুর্গার আরাধনা করেন। এই উৎসবটি শুধু মন্দিরেই নয় বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকমের মনমুগ্ধকর মণ্ডপ তৈরি করে মা দুর্গার পূজা করা হয়। মণ্ডপগুলোতে বিভিন্ন রকমের সাজসজ্জা আলো দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। এই উৎসবকে আরো আনন্দে ভরিয়ে তোলার জন্য মন্ডপে মন্ডপে ভক্তিমূলক গান বাজানো হয়ে থাকে।

সালের দূর্গা পূজার সময়সূচি

ক্রমিক নং উৎসব তারিখ ও মাস বার
০১ মহালয়া ০৬ অক্টোবর বুধবার
০২ মহা পঞ্চমী ১০ অক্টোবর রবিবার
০৩ মহা ষষ্ঠী ১১ অক্টোবর সোমবার
০৪ মহা সপ্তমী ১২ অক্টোবর মঙ্গলবার
০৫ মহা অষ্টমী ১৩ অক্টোবর বুধবার
০৬ মহা নবমী ১৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার
০৭ মহা দশমী ১৫ অক্টোবর শক্রবার

মহালয়া

মহালয়া থেকে বেজে ওঠে মায়ের আগমনী সুর। মহালয়াতে মায়ের বন্দনা করা হয়ে থাকে। কিভাবে মা দুর্গার আবির্ভাব হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। অসুরের অত্যাচারে দেবগন যখন স্বর্গ ত্যাগ করেন তখন সকল দেবগন ও স্বর্গ কে রক্ষা করার জন্য সকলে মিলে তাদের সকলের শক্তি দিয়ে দেবী দুর্গাকে আবির্ভূত করেন। দেবী দুর্গা আবির্ভূত হয়ে সকল অসুরদের বিনাশ করে দেবগন স্বর্গ সকল সৃষ্টিকে রক্ষা করে থাকেন।

মহা পঞ্চমী

মহালায়া থেকেই শুরু হয়ে দেবী পক্ষ। মহালায়ার দিন থেকে শুরু হয় পাঁচ দিন পর হয় মহা পঞ্চমী। এই দিনে মা দুর্গাকে আসনে বসিয়ে তার ঘর দিয়ে মায়ের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়ে থাকে। এই দিন থেকে শুরু করে দশমী পর্যন্ত মা দুর্গা আমাদের মাঝে বিরাজ করেন। লোকমুখে শোনা যায় তিনি শিব ঠাকুরকে রেখে তার বাবার বাড়ি আসেন।

মহাষষ্ঠী

মহাষষ্ঠী এই দিন থেকে শুরু হয়ে যায় মায়ের আরাধনা ১০১টি পদ্ম দিয়ে মাকে পূজা করা হয়ে থাকে। সকলে মায়ের অঞ্জলি দেওয়ার এবং সন্ধ্যার সময় সন্ধারতি করা হয়ে থাকে। সেইসাথে ধুনুচি নাচ ও করা হয়।

মহাসপ্তমী

মহা পঞ্চমী মহাষষ্ঠীর মতোই মহাসপ্তমীতে ও মায়ের আরাধনা করা হয়। অপরদিকে অঞ্জলি দেওয়াসহ সন্ধারতি তো রয়েছেই। সেই সাথে সকলে মিলে সকল মন্দির পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করতে বেরিয়ে পড়ে।

মহাষ্টমী

সকল দিনের মতোই এই দিনটিতে মায়ের পূজা আরধনা করা হয়। সেইসাথে সবচেয়ে জনপ্রিয় পূজা কুমারী পূজা মহিষ বলি কুমড়া বলি দেওয়া হয়ে থাকে। এই দিনটিতেই সকল মায়েরা তাদের সন্তানদের মঙ্গল কামনা করে পূজা করা হলো তাদের ছেলেমেয়েদের হাতে হলুদ সুতা পরিয়ে দেয়।

মহানবমী

মহানবমী মায়ের বিদায়ের আগের দিন। প্রত্যেক দিনের মতোই এই দিনটির শ্রদ্ধাভরে মায়ের আরধনা করা হয়ে থাকে। মায়ের বিদায়ের সময় মায়ের কাছে চলে আসার এই দিনটি সকলের হাসি আনন্দে মেতে ওঠে। নানা রকমের মুড়ি-মুড়কি নাড়ু সন্দেশ তৈরি করা হয়ে থাকে। নাচ-গান ঘোরাঘুরি হাসি আনন্দে ভরে উঠে দিনটি।

মহা দশমী

মায়ের বিদায়ের পালা। মহাকাশ অমৃতের মায়ের বিদায় হয়। এইটি সকল ভক্তগণ মায়ের পায়ের ও সিঁথিতে সিঁদুর দিয়ে মাকে মিষ্টিমুখ করে বরণ করে থাকে। আর সেই সিঁদুর স্ত্রীলোক তাদের সিঁথিতে দিয়ে স্বামীর দীর্ঘায়ু কামনা করে থাকে। এমনকি একজন স্ত্রীর আরেকজন স্ত্রীকে সিঁদুর দিয়ে সিঁদুর খেলা খেলে থাকেন। মায়ের বিদায় টি কষ্টদায়ক হলেও তা আমাদের মেনে নিতে হবে। বলো দুর্গা মাইকি আসছে বছর আবার হবে।

শেষ কথা

সেহেতু করোনাভাইরাস এখনও ছড়িয়ে রয়েছে। সেগুলো স্বল্প পরিসরে দূর্গা পূজার আয়োজন করতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির নিয়ম অনুযায়ী মাস্ক ছাড়া মন্দিরে কিংবা পূজার মন্ডপে প্রবেশ নিষেধ। সকলকে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে পূজা দেখার জন্য অনুরোধ করা হলো। দূর্গা পূজার বিসর্জন দিন কেউ তাড়াহুড়ো করবেন না। পরিশেষে সকলকে দূর্গা পূজার অ্গ্রীম শুভেচ্ছা জানিয়ে এই আর্টিকেলটি শেষ করছি। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

Total Views: 38 ,

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *