ভালোবাসা দিবস হিসেবে সুপরিচিত ইংরেজি ১৪ ফেব্রুয়ারি। ভ্যালেন্টাইন্স ডে যা বাংলা প্রতিশব্দ ভালোবাসা দিবস। সাধারণত গোটা বিশ্বব্যাপী ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে ভালোবাসা দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়। এক্ষেত্রে অনেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। পূর্বে যুক্তরাষ্ট্র বা পাশ্চাত্য দেশ গুলোতে ভালোবাসা দিবসের আনন্দ সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে বাংলাদেশে এই দিনটি তুমুল জনপ্রিয়। বিশেষ করে প্রেমিক-প্রেমিকাদের এই দিনটি নিয়ে বেশি আগ্রহ থাকে। শুধু প্রেমিক-প্রেমিকারা নয় এই দিনে স্বামী-স্ত্রী, বাবা-মা-ভাইবোন, প্রিয় বন্ধুরা মিলিত হয় ভালোবাসার বন্ধনে।
ভালোবাসা দিবসের ইতিহাস
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে কিভাবে এলো বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এমনকি ১৪ ফেব্রয়ারিই কেন ভালোবাসা দিবস। এ সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে আজকে আমাদের এই আয়োজন। প্রাচীন রোমে ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে রোমান দেব-দেবীর রানী জুনোর সম্মানে ছুটির দিন হিসেবে ঘোষনা করা হয়। অনেকের মতে জুনো নারী ও প্রেমের দেবী। প্রাচীন রোমে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন’স ডে একটি উৎসবের দিন। রোমের ধর্মযাজক সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের জীবন ত্যাগের বিনিময়ে আজকের এই বিশ্ব ভালোবাসা দিবস।
সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ছিলেন একজন মানবপ্রেমিক ও খ্রিস্টধর্ম প্রচারক। অপরদিকে রোম সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস ছিলেন বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজায় বিশ্বাসী। ক্লডিয়াস ভ্যালেন্টাইনকে দেব-দেবীর পূজা করতে বলতে তিনি তা না করায় তাকে জেলে বন্ধি করা হয়। সম্রাটের নির্দেশে অনুযায়ী খ্রিস্টধর্ম ত্যাগ করতে বললে ভ্যালেন্টাইন ২৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রীয় আদেশ অমান্য করায় তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়। তারপর থেকেই এই দিনটি সূচনা।
১৪ ফেব্রুয়ারি কেন ভালোবাসা দিবস
লোক মুখে শোনা যায় সেন্ট ভ্যালেন্টাইন কারারুদ্ধ হওয়ার পর অনেক যুবক-যুবতীদের অনেকেই প্রতিদিন তাকে কারাগারে দেখতে আসত এবং ফুল উপহার দিত। তারা বিভিন্ন উদ্দীপনামূলক কথা বলে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে উদ্দীপ্ত রাখত। এক কারারক্ষীর এক অন্ধ মেয়েও ভ্যালেন্টাইনকে দেখতে যেত। অনেকক্ষণ ধরে তারা দুজন প্রাণ খুলে কথা বলত। একসময় ভ্যালেন্টাইন তার প্রেমে পড়ে যায়। সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের আধ্যাত্মিক চিকিৎসায় অন্ধ মেয়েটি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়। ভ্যালেন্টাইনের ভালোবাসা ও তার প্রতি দেশের যুবক-যুবতীদের ভালোবাসার কথা সম্রাটের কানে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ২৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
ভ্যালেন্টাইন্স ডে শুভেচ্ছা
পৃথিবীতে ভালোবাসা আছে বলেই সকল কিছুর সাথে আমাদের সম্পর্ক গুলো এত মধুর। এই ভালোবাসা আছে বলেই আমরা খুব সহজেই অচেনা আজানা মানুষদের আপন করে নিতে পারি। ভালোবাসা শুধু রক্তের সর্ম্পকীয় মানুষদের মধ্যেই থাকে তা নয়। ভালোবাসা থাকে অচেনা মানুষদের মাঝেও। মূলত বর্তমান যুগে এই ভালোবাসা বলতে আমরা বুঝে থাকি একটি ছেলে ও একটি মেয়ের মধ্যে গড়ে উঠা প্রেমের সর্ম্পক। ভ্যালেন্টাইন্স ডে টা সেসকল ছেলেমেয়েরাই বেশি পালন করে থাকে।
বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ১৪ ফেব্রুয়ারি
কোন একদিন তাদের ভালোবাসার সম্পর্ক শুরু হলেও এই দিনটিকে ভালোবাসার দিন হিসেবে বিশেষ ভাবে উদযাপন করে। ভালোবাসার সম্পর্কটি কে রঙিন করে তুলতে নানা আয়োজন করে। যেমন কেক কাটে, ফুল দিয়ে থাকে, রেস্টরেন্টে খাওয়া দাওয়া করে। অনেকেই আবার এই দিনে মনের মানুষকে না বলা কথাটি বলে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করে থাকে।
ফেব্রুয়ারি ১৪ ভালোবাসা দিনটি উদযাপনের নিয়ম
ভালোবাসার এই দিনটিকে উদযাপন করার জন্য সবাই পূর্ব পরিকল্পনা করে থাকে। কিভাবে পুরো দিনটিকে সাজিয়ে গুছিয়ে আনন্দ করবে তার একটি প্ল্যান তৈরি করে। যার জন্য অনেকেই পার্ক, চিড়িয়াখানা, নদীর ধার, রেস্টুরেন্ট, সিনেমা হলের মত জায়গা গুলো বেছে নেয়। ভালোবাসার দিনটিকে আরো রঙিন করার জন্য বাহারি রঙের পোশাক পড়ে। সাধারণত মেয়েরা লাল শাড়ি, আর ছেলেরা পাঞ্জাবি পড়ে থাকে। বর্তমানে ডিজিটাল যুগে প্রিয় মানুষটির সাথে সুন্দর মুহূর্ত গুলো স্মরনীয় রাখতে বিভিন্ন স্ট্যাইলে ছবি তুলে রাখা হয়। অপরদিকে প্রিয় মানুষটির সাথে সেলফি তুলে ফেসবুক সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করার প্রতিযোগিতা চলে।
১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসের এসএমএস
রাত ১২ টা বাজার সাথে সাথে প্রিয় মানুষটিকে SMS এর মাধ্যমে ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা জানাতে ভোলা না কেউই। অপরদিকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস, ছবি, উক্তি কিংবা কবিতা লিখে শেয়ার করে। কেউ কেউ ভালোবাসা দিবসের শর্ট ফিল্ম, গান কিংবা মুভি দেখে সময় কাটায়।
ভালোবাসা দিবসের উক্তি
- আজকে এসো শপথ করি, দুজনে দুজনার হাতটি ধরি
একি সাথে দুজনেই চলবো, একি সুরে দুজনে গাইব
তুমি যে আমার, আমি যে তোমার। - রঙিন দিনের আশায় থাকি
তোমার পাবো বলে
ভালোবাসার শুভেচ্ছা নিও আমায় আপন করে।
ভালোবাসা দিবসের গান
ভালোলাগা আর ভালোবাসা এক নয়।
১৪ ফেব্রুয়ারি ভাইরাল ভিডিও
শেষ কথা
সকল সৃষ্টির মাঝে ভালোবাসা গড়ে উঠুক।